Sunday, September 21, 2014

বন্ধু (১)

সেদিন দেবলিনা  কে দেখ্লাম বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে যখন স্নান করে ভিজে চুলে গামছা জড়িয়ে কাপড় মিলছিল তারে দেবলিনা  সম্পর্কে আমার মামিমা বয়সে আমারি বয়সি হবে উচ্চতা '" গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামবর্নওকে আগেও দেখেছি কিন্তু সেদিন ওকে দেখে কেমন অন্য রকম লাগলো যখন মাথার গামছা টা খুলে চুল ঝারছিল দেখ্লাম অর ঘন কোঁকড়ানো চুল কোমড় ছাড়িয়ে যাচ্ছে আর পিছনে হেলে গামছা দিয়ে ভিনে চুল ঝাড়ছে চুল টা ঝাড়লো তার পর গোছা কাধের সামনে ঘুড়িয়ে যত্ন করে মুছ্তে লাগলো তারপর যত্ন করে আঁচড়াল চুল টা তারপর চুল শুকোতে লাগল রোদে দাঁড়িয়ে ওকে দেখে কি মনে হচ্ছিল জানিনা কিন্তু খুব ইচ্ছে করছিল ওর চুল নিয়ে খেলা করতে হঠাত মনে পড়ল বাড়িতে তো কেও নেই একবার বলে দেখ্লে ক্ষতি কি? ভেবেই আনন্দে ভয়ে উত্তেজনায় বুকটা কেঁপে উঠলো
       ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম আমার দিকে পেছোন ফিরে দাঁড়িয়ে ছিলো আমাকে দেখে নি আমার কথায় যেন চমকে উঠল একটু বললাম
"কি করছো এখানে দাঁড়িয়ে?"
হেসে বলল, "এইচুলটা শুকোচ্ছিলাম"
আমি হেসে বললাম, "তোমার চুলটা কিন্তু খুব সুন্দর"
একটু হাসল
আমি বললাম  "একটা কথা বলব রাগ করবে না"
একটু অবাক হয়ে বলল কি কথা?"
-আমার না খুব ইচ্ছে করছে তোমার চুল টা একবার ধরে দেখ্তে এতো সুন্দর চুল এত কাছ থেকে আমি দেখিনি"
এবার হাসিতে ফেটে পড়্ল তারপর বলল, "বাব্বা অত কিছু না, আর তুমি অত সংকচ করছ কেন? কি এমন জিনিস? আর কি এমন আবদার? তোমার যা ইছে কর না আমি কি বারন করছি? কিন্তু এই খোলা উঠোনে না, কে কোথায় দেখবে, ঘরে চল, বড্ড রোদ"
       দুজনে ঘরে এলামও ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতে লাগলো। আমি বোকার মতো ওর পেছনে খাটে বসে ওকে দেখতে লাগলাম হাঁ করে। ও আয়নায় আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল “কি হল? অমন বোকার মত কি দেখছ? এই তো বললে ধরে দেখতে ইছে হছে কই দেখলে না তো?” আমি আর কি বলি হাসলাম একটু, আসলে উত্তেজনায় তখন আমার বুকের ধুকপুকুনি দ্বিগুন হয়ে গেছে। ও আবার বলল, এবার আদেশের ভঙ্গিতে, “এস এখানে” আমি উঠে গেলাম ওর পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। ও চিরুনি টা আমার হাতে দিয়ে আমার দিকে পিছন ফিরে হেসে বলল “এই নাও। এই চিরুনি আর এই আমার চুল, যা খুশি কর।” দিয়ে আমার দিকে আয়নায় তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো। আমি অপ্রস্তুত হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর আসতে আসতে ওর চুলটা স্পর্শ করলাম। কি নরম। কি ঘন। যেন ওর মাথা থেকে পিঠ বেয়ে কালো জলপ্রপাত জমাট বেঁধে আছে কমরের নিচ অবধি। কেমন অদ্ভুত অনুভূতি বলে বোঝান সম্ভব নয়। চিরুনি নামিয়ে রেখে দুহাতে ওর নরম চুলের গোছটা অনুভব করতে লাগলাম প্রান ভরে। ও আমায় লক্ষ্য করছিল। ও আর হাসছিল না। যেন অবাক হছিল। বুঝতে পারছিল না আমি কি আনন্দে ওর চুল নিয়ে অমন খেলা করছি। কি এমন আছে ওর ওই চুলে। ও হয়ত কনদিন ভাবেনি ওর কাছে এমন কিছু ঐশ্বয্য আছে যা কাঊকে এতটা আনন্দ দিতে পারে। আমি ততক্ষণে অনেকটা সামলে নিয়েছি নিজেকে। ওর চূলে হাত বোলাতে বোলাতে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম “কি দেখছ?” ও বলল “তুমি কি পাগোল?” আমি জিগ্যেস করলাম “কেন?” ও বলল “তোমার মামা কখনও তাকিয়েও দেখেনি ভালো করে আমার দিকে আর তুমি আমার চূলে হাত দিতে পেরে যেন স্বর্গ্য হাতে পেয়েছো এমন করছ”। তাকিয়ে দেখলাম ওর দিকে গাল বেয়ে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ছে। আমি ওকে কাঁধ ধরে আমার দিকে ফিরিয়ে ওর গাল মুছে দিয়ে বললাম “এই, কি হোলো? কাঁদছ কেন?” ও অপ্রস্তুত হয়ে বলল “কই না তো” এবার আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম “সরি আমি তোমার চূলে হাত দিতে চেয়ে ঠিক করি নি। আমায় ক্ষমা করে দিয়ো। আর কখনও করবো না”। ও এবার আমার কান ধরে হেসে বলল “কে বলল ভূল করেছো? তুমি একদম কিছু ভুল করো নি। আমার খুব ভালো লেগেছে। তোমার যখন ইচ্ছে হাত দিয়ো যা প্রাণ চায় করো আমি কিছু মনে করবো না। কথা দাও তুমি কখনও কোনও সঙ্কোচ কোরবে না আমার কাছে।” আমি বললাম “বেশ তাই হবে”। তারপর ও বলল চলো খুব খিদে পেয়েছে বেলা হোলো খাবে চলো। আমি পালিয়ে যাচ্ছি না। খেয়ে নিয়ে গল্প করবো দুজনে সারা দুপুর। তোমার মামাড় ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। আমায় একা একা থাকতে হয় সারাদিন ভুতের মতো। আজ কথা বলার একটা সঙ্গী পাওয়া গেলো”।

                     **********************************************

খেয়ে বাসন ধুয়ে আবার যখন দুজনে ফাঁকা হলাম তখন তিনটে বাজে। আমি বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে একটা ম্যাগাজিনের পাতা ওলটাচ্ছিলাম। ও এসে আমার পাশে বিছানায় বসে বলল “কি? ঘূমোও নি?” আমি দুপুরে ঘুমোই বটে তবে আজ কেন জানি না ঘুম আসছিলো না, মনে মনে অপেক্ষা করছিলাম মামীমা কখন আসবে। ও যে আমার ঘরে আসবে সেটা আমি জানতাম। গরম কাল, বাইরে খাঁ খাঁ রোদ। তাই ঘরের সব দরজা জানলা বন্ধ। ঘরটাকে যতটা ঠাণ্ডা রাখা যায়। জানলার কাচ দিয়ে ঘরে যে আলো আসছে তাতেই ঘরটা বেশ আলো হয়ে আছে। ওর কথার উত্তর না দিয়ে ওকে দেখতে লাগলাম। ঘেমে নেয়ে গেছে এতক্ষণ রান্নাঘরে কাজ করে। ঘাড় কাঁধ গাল কপাল বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। ওর ঘাড়ের কাছে চুলটা হাতখোঁপা করা। কাপড়ের আঁচল দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে আমায় দেখতে লাগলো। ঠোঁটের কোনে হাসিটা সমানে লেগে আছে। জিগ্যেস করলাম “কাজ হোলো?” ও বলল “হাঁ, কাজের মেয়েটা কদিন আসবেনা, তাই বাসন কটা নিজেই ধুয়ে নিলাম। যা গরম পড়েছে। ঘরে টেকা দায়। তুমি কদিনের জন্যে এলে আর কি অবস্থা বল দেখি”। আমি ওকে মাঝপথে থামিয়ে বললাম “তোমার মনে হচ্ছে আমি খারাপ আছি?” ও ঐ হাসি মুখে তাকিয়ে রইল। তারপর বলল “কি এমন ভালো আছো? বাড়ীতে থাকলে গরমে পচে মড়তে হোতো না”
-“কিন্তু বাড়ীতে তো আর তোমার মতো এমন সুইট মামীমাটা নেই”
ও এবার হেসে গড়িয়ে পড়লো। আর আমি অবাক মুগ্ধ হয়ে ওর হাসি দেখছিলাম। কি নির্মল। কি ঊচ্ছল। পৃথিবীর নির্মলতম হাসি।
হঠাৎ চোখ পড়লো ওর খোঁপাটায়। একটা বড় কালো উলের বল যেন। মনে পড়লো কি নরম। আমার আবার খুব ইচ্ছে হোলো ঐ বল নিয়ে খেলা করতে। আমি উঠে মাথার বালিশটা পিঠে নিয়ে আধশোয়া হয়ে বসলাম। আর আমার পাশে পাশবালিশটাকে ঠেলে দিয়ে বললাম “এখানে এসো”। দেখলাম ও কোনও প্রশ্ন না করে আমার পাশে এসে বালিশটায় হেলান দিয়ে বসল, তারপর ম্যাগাজিনটা টেনে নিয়ে পাতা ওলটাতে লাগলো। আমার এতো কাছে ওর মাথাটা যে ওর চুলের গন্ধ পাচ্ছিলাম আমি। তাতে যেন নেশা ধরে যায়। অবাক হয়ে ওকে দেখছি এমন সময় ও প্রশ্ন করলো “তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে?” আমি হেসে বললাম “না, কেন?”
-“আজকাল সবারই তো থাকে, তোমার নেই কেন”
-“কেন? গার্লফ্রেন্ড রাখাটা কি বাধ্যতামূলক?”
-“না তা নয়। কিন্তু তোমার থাকা উচিৎ। কেন জানিনা মনে হল”।
-“আমার নেই”
-“যদি হয় আমায় দেখিয়ো একবার”
ও কথা বোলতে লাগলো আমি উত্তর দিছিলাম, আর ওকে লক্ষ্য করছিলাম, ক্রমে যেন আমার চাহনি ওর অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আর কেন জানিনা আমার সেটা ভালো লাগছিলো। ক্রমে ওর কথা এতো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছিল যে ওর অস্বস্তি ওর কথায় প্রকাশ পাচ্ছিল। আমি আর থাকতে না পেরে ওর আর একটা অপ্রাসঙ্গিক কথার মাঝে ওকে থামিয়ে ওকে চমকে দিয়ে ওর চুলের খোঁপা তা একটানে খুলে ফেলে ঐ চুলের গোছাটা ওর ঘাড়ের কাছে শক্ত করে টেনে ধরে ওর মুখ টাকে আমার মুখের কাছে টেনে এনেও নিজেকে সামলে নিলাম। দুজনেরই বুক তখন হাপরের মতো ওঠানামা করছে। ওর চুল ছেড়ে দিয়ে ওকে বললাম “ সরি মামীমা, আমি ঠিক...” ও মুখের ওপর একবার দুহাত বুলিয়ে নিয়ে, একটুক্ষণ পরে আস্তে আস্তে বলল “তুমি অত সরি বল কেন? আমি তো বলেছি আমার কাছে সঙ্কোচ করবে না, আর তোমার ওপর আমার ভরসা আছে, আর এখন থেকে সেটা নিজের থেকেও বেড়ে গেছে” তারপর বলল “একটা আণূরোধ রাখবে?” আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও বলল “আমায় তোমার বন্ধু করবে?” বললাম “সে কি বোলতে হয়?”
-“আমায় মামীমা বলবে না” ও যেন আবদার করলো।
-“তা কি করে হয়? মামার সামনে আমি তোমায় নাম ধরে কি করে ডাকি?”
-“সে আমি জানি না। তুমি আমায় মামীমা বলবে না ব্যস”।
-“তবে কি বলবো?”
-“নাম ধরে ডাশাবে।
আমি লজ্জায় মুখ নামালাম। ও জোর করলো, “বল দেবলিনা । বল। বলবে কিনা। না বললে আমার চুলে হাত দিতে দেবো না।” এবার আমায় বোলতেই হল “দেবলিনা” ও হাসল। তারপর বলল “চাইলে মুনমুন ও বলতে পারো, ওটা আমার ডাকনাম আমার স্কুল কলেজের বন্ধুরা আমায় ঐ নামেই ডাকতো”। আমি বললাম “এটা বেটার। আমি বরং তোমায় মুন বোলে ডাকব”। ও আবার একগাল হাসল।
       সেদিন বাকি দুপুরটা ও আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আমার কোলে চুল ছড়িয়ে দিয়ে আর আমি ওর চুল নিয়ে খেলা করে কাটালাম। আমার জীবনের সেরা দুপুর ছিল এটা সেদিন অবধি। তখনও জানতাম না ভালো সময় সবে শুরু হয়েছিল।  তখনও সন্ধ্যেটা বাকি ছিল। আর সেই সুখের স্মৃতি সারা জীবণ আমার সঙ্গে থাকবে তাও তখন বুঝতে পারিনি।

No comments:

Post a Comment